Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন

ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন

ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন

মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল গাজায় অবশেষে ৪৬০ দিনের দীর্ঘ যুদ্ধের ইতি টানতে ইসরাইল ও হামাস একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদন করেছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ইসরাইলের পূর্ণ মন্ত্রিসভা ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর এই চুক্তি অনুমোদন করে। ফলে পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে বন্দিবিনিময় ও জিম্মি মুক্তি কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, "ইসরাইল সরকার একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে রোববার থেকে চুক্তি কার্যকর হওয়ার পথ সুগম হয়েছে।"

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, ইসরাইলের মন্ত্রিসভায় চুক্তি নিয়ে তীব্র মতবিরোধ ছিল। চুক্তির বিরোধিতাকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কট্টরপন্থি নেতা ছিলেন। তবে চূড়ান্তভাবে ২৪ জন মন্ত্রী চুক্তির পক্ষে ভোট দিলেও আটজন এর বিপক্ষে অবস্থান নেন।

এর আগে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভাও এই চুক্তি অনুমোদন করে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি হয়। সেখানে বলা হয়, "রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং মানবিক সবদিক বিবেচনা করে যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ চুক্তি গ্রহণ করা হয়েছে।"

এই চুক্তির প্রাথমিক মেয়াদ ছয় সপ্তাহ অর্থাৎ ৪২ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চুক্তিতে উল্লেখিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:

১. ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার:
গাজা উপত্যকা থেকে ধাপে ধাপে ইসরাইলি বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হবে।

২. বন্দি ও জিম্মি মুক্তি:

প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে। এই বন্দিদের মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ রয়েছেন।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসরাইল ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে।

৩. দ্বিতীয় ধাপ:

প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়ার পর ১৬ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।

এই ধাপে অবশিষ্ট ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি, গাজা থেকে সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৪. তৃতীয় ধাপ:

অবশিষ্ট মৃতদেহ ফেরত দেওয়া এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।

মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গাজা পুনর্গঠনের তদারকি করা হবে।

ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এই চুক্তি নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কিছু কট্টরপন্থি নেতা এই চুক্তির বিরোধিতা করে একে ইসরাইলের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, "এই চুক্তি যুদ্ধের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।"

ফিলিস্তিনি জনগণ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে অনেকে এটিকে স্থায়ী সমাধানের পথে একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন।

গাজায় সংঘাতের ইতিহাসে ইসরাইল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নতুন কিছু নয়। তবে এই চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ ৪৬০ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ইতি ঘটতে পারে। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে উভয় পক্ষের মানবিক সংকট কিছুটা লাঘব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।





P.S 220 Winter concert

P.S 220 Winter concert